মালয়েশিয়ার দর্শনীয় স্থান, বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়া যাওয়ার বিভিন্ন প্যাকেজ, খরচ ও নিয়ম-কানুন

আপনি কি কখনও প্রকৃতি, সংস্কৃতি আর প্রাচীন পুরাকীর্তি একসাথে উপভোগ করার কথা ভেবেছেন? যদি তাই হয়, তাহলে ঘুরে আসতে পারেন বৈচিত্র্যময় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর পৌরাণিক স্থাপনার দেশ মালয়েশিয়া থেকে। 

এই মনোমুগ্ধকর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটি, তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, অসাধারণ ল্যান্ডস্কেপ আর প্রানবন্ত সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের জন্য বিখ্যাত। মালয়েশিয়ার আছে বিস্ময়কর টেপেস্টি, আকাশচুম্বী প্রাচীন মন্দির থেকে শুরু করে রাজধানী কুয়ালালামপুরের জনপ্রিয় স্ট্রিট ফুড। 

তবে এখানেই শেষ নয়, মালয়েশিয়া কে আরো গভীরভাবে এক্সপ্লোর করতে এবং মনে রাখার মত একটি ট্যুর প্লান করতে আমাদের সাথেই থাকুন। আজকে, মালয়শিয়ায় যাওয়া থেকে শুরু করে, নির্বিঘ্নে ভ্রমন, উপভোগ আর ফিরে আসার সকল তথ্য নিয়ে হাজির হলাম। আর্টিকেলে থাকছে   বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়া যাওয়ার বিভিন্ন প্যাকেজ, খরচ ও নিয়ম কানুন 

মালয়েশিয়া কেনো বিখ্যাত?

মালয়েশিয়া আসলে মনোমুগ্ধকর সৌন্দর্য, কালচার ও স্থাপনার সংমিশ্রণ। তাহলে জেনে নিন, পৃথিবী জুড়ে পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ ও বিখ্যাত হবার পেছনে মালয়েশিয়ার সেই কারন গুলো৷ 

কালচারাল ডাইভার্সিটি:

মালয়েশিয়ার খ্যাতিতে অবদান রাখার অন্যতম প্রধান বিষয় হল এর ব্যতিক্রমী সংস্কৃতি। মালয়, চীনা, ভারতীয় এবং বিভিন্ন আদিবাসী সম্প্রদায়ের জনসংখ্যার মেলবন্ধনের মাধ্যমেই উৎপত্তি হয়েছে এই জাতির। তাই, মালয়েশিয়ায় ঐতিহ্য, ভাষা, উৎসব এবং রন্ধনশৈলীর এক অনন্য সংমিশ্রণ ঘটেছে। 

দর্শনার্থীদের জন্য এখানে আছে কুয়ালালামপুরের চায়নাটাউনের জমজমাট রাস্তা, লিটল ইন্ডিয়াতে দীপাবলির উদযাপনের অভিজ্ঞতা নেয়ার সূযোগ,   অথবা UNESCO- তালিকাভুক্ত জর্জ টাউন, পেনাং-এ প্রদর্শিত সমৃদ্ধ মালয় ঐতিহ্যে কাছ থেকে উপভোগ করার সূযোগ। 

মালয়েশিয়ার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য:

মালয়েশিয়ার খ্যাতি আর তার সাংস্কৃতিক সমৃদ্ধির বাইরেও আছে এর শ্বাসরুদ্ধকর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। দেশটিতে আছে প্রাচুর্য আর সম্পদের এক অনন্য আশীর্বাদ যা বিশ্বজুড়ে দর্শনার্থীদের আকৃষ্ট করে। এখানে আপনি পাবেন খেজুর গাছের ঘেরে ঘেরা আদিম সৈকত থেকে শুরু করে বিদেশী উদ্ভিদ এবং প্রাণীজগতে ভরা প্রাচীন রেইনফরেস্ট। তাছাড়া মালয়েশিয়ায় আপনি বিভিন্ন ধরণের নাচ্যারাল ল্যান্ডস্কেপ উপভোগ করতে পারবেন, যা এশিয়ার অন্য দেশগুলোতে পাবেন না। 

প্রকৃতি

এছাড়া একদিকে, রাজধানী কুয়ালালামপুরের আইকনিক পেট্রোনাস টুইন টাওয়ার, অন্যদিকে ক্যামেরন হাইল্যান্ডস এবং তামান নেগারা ন্যাশনাল পার্কের সবুজের স্নিগ্ধতা এবং রোমাঞ্চকর পথ। মোটকথা একজন ভ্রমন প্রেমী তার সৌন্দর্য আন্বেষণের সবটুকু ইচ্ছা পুরন করে আসতে পারবে শুধুমাত্র এক মালয়েশিয়া ট্রিপ থেকে। 

মালয়েশিয়ার বৈচিত্রপূর্ণ্য খাবার:

আমার মত সারা বিশ্বের খাদ্যপ্রেমীরা জানেন যে মালয়েশিয়া হল “এশিয়ার ফুড প্যারাডাইস”। অর্থাৎ রন্ধনশৈলীর এক স্বর্গরাজ্য। দেশটিতে বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক প্রভাব থাকায় মালয়, চাইনিজ, ভারতীয় এবং দেশীয় স্বাদের মিশ্রণ এসে এদের খাদ্যের স্বাদকে সমৃদ্ধ করেছে।

তাদের খাবারে পাবেন ভারতীয় তরকারির সুগন্ধি মশলা এবং অন্যদিকে মালয়ের আদিবাসী টেস্ট আর চাইনিজ খবারের ভ্যারাইটি। মালয়েশিয়ার স্ট্রিট থেকে শুরু করে বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট হোটেলে পাবেন অসংখ্য খাবারের আইটেম। যা আপনার মালয়েশিয়া ভ্রমন অভিজ্ঞতাকে আরো সুন্দর আর মেমোরেবল করে রাখবে।  

আধুনিকতা:

যদিও মালয়েশিয়া তার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য কে খুব ভালভাবে রিপ্রেজেন্ট করে। তারপরও দেশটি  তার নান্দনিকতা আর আধুনিকতার জন্যও পরিচিত। এর রাজধানী শহর কুয়ালালামপুর দেশের ফাস্ট ডেভেলপমেন্ট এর এক উজ্জ্বল উদাহরণ। এখানকার আইকনিক পেট্রোনাস টুইন টাওয়ার, একসময় বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ভবন হিসেবে পরিচিত ছিল। যাকে বর্তমানে মালয়েশিয়ার উচ্চাকাঙ্ক্ষা এবং অগ্রগতির প্রতীক হিসেবে মানা হয়। শহরটি আধুনিক অবকাঠামো, বিশ্বমানের শপিং মল এবং একটি সমৃদ্ধ বিজনেস ডিসট্রিক্ট হিসেবে সুপরিচিত। 

মালেশিয়া ছবি

এছাড়া কুয়ালালামপুরের বাইরে, পেনাং, জোহর বাহরু এবং মালাক্কার মতো মালয়েশিয়ার শহুরে সেন্টার গুলো ইতিহাস এবং আধুনিক সুযোগ-সুবিধায় সমৃদ্ধ একটি পার্ফেক্ট আবাসস্থল।  

আপনি যদি একসাথে প্রাচীন সংস্কৃতি এবং আধুনিক সুযোগ-সুবিধা উভয়ের সন্ধানে থাকেন, তাহলে মালয়েশিয়া আপনার জন্য আদর্শ গন্তব্য। 

মালয়শিয়ার দর্শনীয় স্থান সমূহ

মালেশিয়া

মালয়েশিয়ায় দর্শনীয় স্থানের আর নান্দনিক স্থাপনার কোনো কমতি নেই। সাথে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য তো থাকছেই। মালয়েশিয়া ভ্রমণে যে স্থান গুলো ঘুরে না দেখলেই নয়- 

পেট্রোনাস টুইন টাওয়ারস, কুয়ালালামপুর 

বিখ্যাত গগনচুম্বী এক অট্টালিকা, যেখান থেকে রাজধানী শহরের অসাধারণ ফুল ভিউ দেখা যায়। এটি একদম কুয়ালালামপুরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত। পাবলিক ট্রান্সপোর্ট বা ট্যাক্সির মাধ্যমে এয়ারপোর্ট বা হোটেল থেকে সরাসরি এখানে যাওয়া যায়। 

ল্যাংকাউই দ্বীপ, কেদাহ

আদিম সৈকত এবং গভীর রেইনফরেস্ট সহ একটি ট্রপিকাল প্যারাডাইজ। এই উপদ্বীপটি মালয়েশিয়ার উত্তর-পশ্চিম উপকূলে অবস্থিত। এখানে কুয়ালালামপুর বা পেনাং থেকে বিমান বা ফেরিতে পৌঁছানো যায়।

মাউন্ট কিনাবালু, সাবাহ

অত্যাশ্চর্য প্রাকৃতিক পরিবেশ এবং বৈচিত্র্যময় গাছগাছালিতে ঘেরা মালয়েশিয়ার সর্বোচ্চ চূড়া। এটি কিনাবালু জাতীয় উদ্যানে অবস্থিত। কোটা কিনাবালুতে ফ্লাইটে যেতে হবে। তারপরে এই পার্কে বাস বা ট্যাক্সিতে করে যেতে হবে। 

জর্জটাউন, পেনাং

ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট, যেটি তার ঔপনিবেশিক স্থাপত্য এবং প্রাণবন্ত স্ট্রিট আর্টের জন্য বিখ্যাত। এটি পেনাং দ্বীপে অবস্থিত। কুয়ালালামপুর বা ল্যাংকাউই থেকে ফ্লাইট বা ফেরিতে এখানে সহজেই পৌঁছানো যায়।

book air ticket goofly24.com

ক্যামেরন হাইল্যান্ডস, পাহাং

চা বাগান, শীতল জলবায়ু এবং মনোরম হাইকিং ট্রেইলের জন্য পরিচিত একটি পাহাড়ি স্টেশন। এটি টিটিওয়াংসা রেঞ্জে অবস্থিত। এখানে কুয়ালালামপুর বা পেনাং থেকে সড়কপথে যাওয়া যায়।

বোর্নিও রেইনফরেস্ট, সারাওয়াক

একটি জীববৈচিত্র্যপূর্ণ ফরেস্ট যা বন্যপ্রাণী এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অনন্য মেলবন্ধন। এটি বোর্নিওর মালয়েশিয়ান অংশে অবস্থিত। প্রথমে কুচিং বা মিরিতে ফ্লাইটে যেতে হবে। তারপরে স্থানীয় পরিবহনে রেইনফরেস্টে যেতে পারবেন। 

মেলাকা সিটি

একটি ঐতিহাসিক শহর যা পর্তুগিজ, ডাচ এবং ব্রিটিশ কালচারের মিশ্রনে তৈরি। এই উপদ্বীপটি মালয়েশিয়ার পশ্চিম উপকূলে অবস্থিত। কুয়ালালামপুর বা সিঙ্গাপুর থেকে সড়কপথে এখানে যাওয়া যাবে।

এছাড়াও, পারহেন্টিয়ান দ্বীপপুঞ্জ সহ আরো অনেক মনোমুগ্ধকর স্থান দেখতে পারবেন এক মালয়েশিয়া ট্রিপে। 

মালয়েশিয়ার শপিং মল তালিকা

ভ্রমণে যাবেন আর কেনাকাটা করবেন না তা তো হয় না। তাই মালয়শিয়ার কিছু টপ ক্লাস থেকে শুরু করে বাজেট ফ্রেন্ডলি শপিং মলের তালিকা দিলাম-

সুরিয়া কেএলসিসি মল

হাই-এন্ড ফ্যাশন ব্র্যান্ড, বিলাসবহুল পণ্য এবং আন্তর্জাতিক ডিজাইনার সব পণ্য পাবেন এখানে। এটি আইকনিক পেট্রোনাস টুইন টাওয়ারের নীচে অবস্থিত।

প্যাভিলিয়ন কুয়ালালামপুর

বুকিত বিনতাং, কুয়ালালামপুরে অবস্থিত এই মলে প্রিমিয়াম ফ্যাশন ব্র্যান্ড, আন্তর্জাতিক খুচরা বিক্রেতা এবং বিলাসবহুল পণ্য পাবেন। 

মিড ভ্যালি মেগামল

মিড ভ্যালি সিটি, কুয়ালালামপুরের এই মলে ফ্যাশন, ইলেকট্রনিক্স, হোম ডেকোর এবং বিনোদন সহ বিভিন্ন দোকানের দেখা পাবেন। এখানে জনপ্রিয় সিনেমা কমপ্লেক্স এবং বিভিন্ন খাবারের অপশনও রয়েছে।

এছাড়াও, সানওয়ে পিরামিড, ওয়ান উটামা শপিং সেন্টার, গার্নি প্লাজা, AEON Mall Bukit Indah

গার্ডেন মল, IOI সিটি মল, কুইন্সবে মল মালয়েশিয়ার কিছু জনপ্রিয় শপিং মল। 

মালয়েশিয়ার জনপ্রিয় খাবার তালিকা

একজন টুরিস্ট হিসেবে ফুড প্যারাডাইজ, মালয়েশিয়ার মাস্ট ট্রাই কিছু খাবার হল-

নাসি লেমাক

এটি নারকেলের দুধে রান্না করা একরকম সুগন্ধি ভাত। একে মশলাদার সাম্বল, ভাজা অ্যাঙ্কোভিস, চিনাবাদাম, সেদ্ধ ডিম এবং শসা দিয়ে পরিবেশন করা হয়।

Char Kway Teow

এটি চিংড়ি, cockles, শিম স্প্রাউট, ডিম, চাইনিজ সসেজ, এবং সয়া সস দিয়ে ভেজে তৈরী করা এক ধরনের ফ্ল্যাট রাইস নুডলস।

সতে

এটা হচ্ছে স্কেউয়ারড এবং গ্রিল করা মাংস (সাধারণত মুরগি বা গরুর মাংস) যা চিনাবাদাম সসের সাথে পরিবেশন করা হয়।

মি গোরেং মামাক

ভাজা নুডলস (সাধারণত হলুদ নুডলস) সাথে শাকসবজি, চিংড়ি, টোফু এবং একটি মশলাদার সস দিয়ে বানানো হয়। এটা সাধারণত ভারতীয়-মুসলিম স্টলে পাওয়া যায়।

রেনডাং

এটা গরুর মাংস বা মুরগির মাংস দিয়ে তৈরি একটি টেস্টি এবং সুগন্ধযুক্ত তরকারি। একে নারকেলের দুধে রান্না করা হয়। 

তাছাড়া এখানে সেন্ডোল, তেহ তারিক, লাকসা, হাইনানিজ চিকেন রাইস, রোটি ক্যানাই এর মত মজাদার ও নতুন নতুন সব খাবার ট্রাই করতে পারেন। 

বাংলাদেশ থেকে কিভাবে মালয়েশিয়া যাবেন?

বাংলাদেশ থেকে ৩,৭৪২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই দেশটিতে পৌঁছাতে আপনি কয়েক রকম ট্রান্সপোর্ট ব্যাবহার করতে পারবেন। অন-এয়ার থেকে শুরু করে শিপ জার্নি, সব কিছু নিয়েই আলোচনা করবো-

সরাসরি  ফ্লাইট | বাংলাদেশ টু মালয়েশিয়া

বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়া পৌঁছানোর সবচেয়ে সুবিধাজনক এবং টাইম সেভিং উপায় হল বিমান। বেশ কয়েকটি এয়ারলাইন্স এই দুটি দেশের মধ্যে ফ্লাইট ম্যানেজ করে। তাদের কাছ থেকে আপনি সরাসরি এবং কানেক্টেড দুই রকম ফ্লাইটের সুবিধা পাবেন। 

ঢাকা, বাংলাদেশ থেকে কুয়ালালামপুর, মালয়েশিয়ায় সরাসরি ফ্লাইট অফার করে এমন জনপ্রিয় এয়ারলাইনগুলির মধ্যে রয়েছে:

  • মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্স
  • এয়ারএশিয়া এবং 
  • মালিন্দো এয়ার। 

আপনার ভ্রমণের তারিখের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত অপশন খুঁজে পেতে এবং তাদের মূল্য জানতে হলে ওয়েবসাইট ভিজিট করে দেখতে পারেন।

কানেক্টেড ফ্লাইট | বাংলাদেশ টু মালয়েশিয়া 

আপনি যদি সরাসরি ফ্লাইট খুঁজে না পান বা অলটারনেটিভ কোনো অপশন চান তাহলে আপনি কানেক্টেড ফ্লাইট গুলো সিলেক্ট করে নিতে পারেন৷ বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ার ফ্লাইটের জন্য সাধারণত  সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক এবং দুবাই এর কানেক্টেড ফ্লাইট পাবেন। যদিও এটি আমাদের ভ্রমণের সময় বাড়িয়ে দিবে। তবে আপনি এক ট্রিপ এ কয়েকটি দেশে পা রাখছেন সেটাও বা কম কি!

স্থলপথে ভ্রমণ | বাংলাদেশ টু মালয়েশিয়া

যেসব ট্রাভেলাররা ওভারল্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার বেশি উপভোগ করেন, তাদের জন্য স্থলপথে বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়া ভ্রমণ করার অপশন আছে। এই অপশনটি কিন্তু আরও সময়সাপেক্ষ। কিন্তু যারা আমার মত যাত্রা পথে একাধিক দেশ ঘুরে দেখতে চান তাদের জন্য একটি দারুণ অভিজ্ঞতা হতে পারে। 

এইভাবে মালয়েশিয়ায় পৌঁছানোর আগে যাত্রায় সাধারণত ভারত, মায়ানমার এবং থাইল্যান্ডের সীমানা অতিক্রম করা হয়। তাই একসাথে আপনি অনেক কিছু উপভোগ করতে পারবেন। 

সমুদ্রপথে মালয়েশিয়া ভ্রমণ | বাংলাদেশ টু মালয়েশিয়া

বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়া পৌঁছানোর আরেকটি এডভেঞ্চারাস কিন্তু অপ্রচলিত উপায় হল সমুদ্রপথ। কিছু ক্রুজ লাইনার এবং কার্গো জাহাজ দুই দেশের মধ্যে ভ্রমণ রুট অফার করে। 

তবে, এই অপশনটির জন্য সিকিউর প্লানিং প্রয়োজন। কারণ জাহাজে ভ্রমণের সময়সূচী এবং এভেইলএবলিটি বার বার পরিবর্তিত হতে থাকে। তাই রেগুলার আপডেট রাখার ট্রাই করবেন। 

উপরন্তু, এই দুঃসাহসিক ভ্রমণ শুরু করার আগে ভ্রমণ অপারেটরদের নিয়েও একটু রিসার্চ করে নিবেন। কারণ ট্রাভেলিং, এডভেঞ্চার সব কিছুর উর্ধে আমাদের জীবনের নিরাপত্তা। 

ট্রাভেল এজেন্সি | বাংলাদেশ টু মালয়েশিয়া

ঝামেলামুক্ত ভাবে যদি একটা কমপ্লিট ট্যুর প্লান করতে চান তাহলে বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্সির সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। তারা সাশ্রয়ী মূল্য আপনাকে আসা-যাওয়া ও থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করে দেবে। সাথে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা আর ট্যুর গাইড ও ইনক্লুড করতে পারবেন।

মালয়েশিয়া ভ্রমণে যত খরচ

মালয়েশিয়া যাওয়া আসার টিকিট থেকে শুরু করে, থাকা-খাওয়া, এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় ঘুরতে যাওয়া ও বিভিন্ন একটিভিটিতে অনেক রকম খরচ হতে পারে। সেগুলোরই একটি সম্ভাব্য তালিকা দিলাম- 

বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়া যাওয়ার ফ্লাইট খরচ:

যেকোনো আন্তর্জাতিক ভ্রমণের জন্য সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য খরচ সাধারণত ফ্লাইটের টিকিট। সাধারণত, বাজেট এয়ারলাইনস গুলো কম্পিটিটিভ ভাড়া অফার করে, এবং অগ্রিম বুকিং ও কম দামে সুরক্ষিত ভ্রমণে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। ঢাকা থেকে কুয়ালালামপুর পর্যন্ত একটি রাউন্ড-ট্রিপ ফ্লাইটের গড় খরচ এয়ারলাইন, সিজন এবং বুকিং সময়ের উপর নির্ভর করে  ১৫ ০০০ টাকা থেকে ৩৫০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

আপনি বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়া যাওয়ার সময়, বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের তুলনা করে এবং অনলাইন ভ্রমণ পোর্টালগুলো ব্যবহার করে সেরা ডিলটি বাছাই করে নিতে পারেন। 

মালয়েশিয়ায় থাকার খরচ:

মালয়েশিয়ায় সব রকমের, বাজেটের সাথে মানানসই পর্যটকদের জন্য আবাসন ব্যবস্থা রয়েছে। এখানে আপনি বিলাসবহুল হোটেল থেকে শুরু করে বাজেট-ফ্রেন্ডলি গেস্টহাউস এবং হোস্টেল এর মত প্রচুর বিকল্প অপশন পাবেন। রাজধানী শহর কুয়ালালামপুরেও বাজেট লিমিটের মধ্যে বিভিন্ন ধরণের আবাসন সুবিধা পাওয়া যায়।  

গড়ে, কুয়ালালামপুরে একটি মধ্য-পরিসরের হোটেল রুমের  জন্য প্রতি রাতে প্রায় ১৫০ থেকে ৩০০ রিংগিত (৩৪০০-৭০০০ টাকা) হতে পারে। 

আপনি যদি কম বাজেটের অপশন খুঁজেন তাহলে, হোস্টেল এবং গেস্টহাউস গুলো দেখতে পারেন। এগুলোর খরচ প্রতি রাতে ৫০-১০০ রিংগিত (১,১০০-২,২০০ টাকা) পর্যন্ত হতে পারে।

মালয়েশিয়ায় পরিবহন খরচ:

মালয়েশিয়ার অভ্যন্তরীণ যাতায়াত তুলনামূলকভাবে অনেক সাশ্রয়ী। আর এজন্য মালয়েশিয়ার উন্নত পরিবহন ব্যবস্থাকে ধন্যবাদ দিতেই হবে। শহরগুলোর মধ্যে, বাস, ট্রেন এবং মনোরেলের মতো গণপরিবহন গুলিতে সাশ্রয়ী ভাড়ার ব্যাবস্থা থাকে। 

ভাড়া সাধারণত প্রতি ট্রিপে MYR 1 থেকে MYR 5(২০-১০০ টাকা) পর্যন্ত হয়। এছাড়াও দীর্ঘ যাত্রার জন্য, দূরপাল্লার বাস নেওয়ার কথা ভাবতে পারেন। কারণ এগুলোও বেশ সাশ্রয়ী মূল্যের অফার করে। 

গ্র্যাবের মতো ট্যাক্সি এবং রাইড-হেলিং সার্ভিস গুলোও এখানে পাওয়া যায়। কিন্তু এগুলো কিছুটা বেশি ব্যয়বহুল হতে পারে। তবে আমার মতে, পরিবহন খরচ যত কম রাখা যায় ততই ভাল। 

খাবার খরচ:

মালয়েশিয়া ভ্রমণের অন্যতম আকর্ষণ হল এর বৈচিত্র্যময় খাবার। এশিয়ার ফুড প্যারাডাইসে যাবেন আর বিভিন্ন রকম খাবার ট্রাই করবেন না তা তো হয় না। এখানে আপনি রাস্তার খাবারের স্টল থেকে শুরু করে উচ্চমানের রেস্তোরাঁ পর্যন্ত সব রকম ব্যাবস্থা পাবেন। 

বাজেট-সচেতন ভ্রমণকারীদের জন্য, স্ট্রিট ফুড গুলো খুবই সাশ্রয়ী আর এডভেঞ্চারাস হবে। এক্ষেত্রে আপনি খাবার প্রতি ৫ রিংগিত থেকে ১০ রিংগিত (১০০ থেকে ২০০ টাকা) এর মধ্যে কম দামে নাসি লেমাক, রোটি ক্যানাই এবং সাতে-এর মতো সুস্বাদু স্থানীয় খাবারগুলি উপভোগ করতে পারেন। 

স্থানীয় রেস্তোরাঁগুলিতে, একটি বাজেট-ফ্রেন্ডলি খাবারের জন্য প্রায় ২০০-৫০০ টাকা খরচ হতে পারে৷ উপরন্তু, তাদের বিভিন্ন সুপারমার্কেট এবং ব্যস্ত রাস্তার পাশের দোকান গুলো সাশ্রয়ী মূল্যে স্ন্যাকস এবং পানীয় বিক্রি করে থাকে। আর ভিআইপি এক্সপেরিয়েন্সের জন্য নামীদামী রেস্তোরাঁ ও ফাইভ স্টার হোটেলে আপনাকে খাবার প্রতি ১০০০-৫০০০ টাকা পর্যন্তও গুনতে হতে পারে। তাই আমার পরামর্শ হবে রেগুলার খাবারের জন্য সুস্বাদু স্ট্রিট ফুড ট্রাই করা অথবা নিজ নিজ হোটেলে খাবার ম্যানেজ করা।

মালয়েশিয়ার দর্শনীয় স্থান ভ্রমণ ও বিভিন্ন একটিভিটির খরচ:

আইকনিক ল্যান্ডমার্ক থেকে শুরু করে ন্যাচারাল হেরিটেজ পর্যন্ত মালয়েশিয়ায় প্রচুর আকর্ষণ রয়েছে। এমন দর্শনীয় স্থান এর অনেকগুলোতেই সাশ্রয়ী মূল্যে বা বিনামূল্যে প্রবেশ করা যায় রয়েছে। যেমন ধরুন, কুয়ালালামপুরের আইকনিক পেট্রোনাস টুইন টাওয়ার পরিদর্শন করতে পর্যবেক্ষণ ডেকের জন্য শুধুমাত্র একটি নামমাত্র ফি প্রয়োজন। 

অত্যাশ্চর্য বাতু গুহা, ল্যাংকাউইর সৈকত, বা মেলাকার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যবাহী স্থানগুলো পরিদর্শন করা যায় একদম বিনামূল্যে বা ন্যূনতম প্রবেশ ফি দেয়া হয় রেগুলার টাইমে। তবে নরমালি পার্ক, দর্শনীয় স্থান ও নিদর্শন গুলো পরিদর্শন করতে ৫০-২০০ বাংলাদেশী টাকা খরচ হতে পারে। 

এছাড়া, আপনি যদি মালয়েশিয়ায় কোনো এক্সট্রা একটিভিটি এনজয় করতে চান তাহলে গুনতে হবে আলাদা টাকা। যেমন, ওয়াটার স্পোর্টস ও ডাইভিং এর জন্য ৫০০-২০০০ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে। 

মালয়েশিয়ায় কিছু হিডেন কস্ট: 

ভ্রমণ বীমা, ভিসা ফি (যদি প্রযোজ্য হয়), সিম কার্ড কেনা এবং সার্ভিস চার্জের মতো বিবিধ খরচের হিসাব রাখা অপরিহার্য। ভ্রমণ বীমা খরচ, কভারেজ এবং সিজনের উপর ভিত্তি করে পরিবর্তিত হতে পারে। কিন্তু সাধারনত ১৫০০  থেকে ৪০০০ টাকা হতে পারে। ডেটা প্ল্যান সহ সিম কার্ড এখানে রেগুলার পাওয়া যায়, যার দাম প্রায় ১৫ রিংগিত থেকে ৩০ রিংগিত। তাছাড়া এনজয়মেন্ট এবং ব্যক্তিগত কেনাকাটার খরচগুলি আপনার নিজের ওপর নির্ভর করে। 

বাংলাদেশ টু মালয়েশিয়া ভ্রমণ প্যাকেজ

ব্যাক্তিগত খরচে মালয়েশিয়া ভ্রমণের থেকে বিভিন্ন প্যাকেজে মালয়েশিয়া যাওয়া বেশি সাশ্রয়ী এবং কম ঝামেলামুক্ত। বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়া ভ্রমণের এমনই কিছু এভেইলএবল ভ্রমণ প্যাকেজ হল- 

কুয়ালালামপুরের ৩ দিন দুই রাতের প্যাকেজ

অবকাশ ট্রাভেল এজেন্সি কর্তৃক আয়োজিত মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুর এ তিন দিন দুই রাত থাকার এই অফার টি বর্তমানে চালু আছে। এই প্যাকেজে যেসব সুবিধা থাকছে- 

  • এয়ারপোর্ট থেকেই গ্রিট এন্ড রিসিভ, এবং হোটেলে নিরাপদে পৌঁছে দেয়া
  • ভিসা এসিস্ট্যান্ট 
  • দিনের অর্ধেক সময়ের জন্য ফ্রী ট্রাভেল গাইড ও ট্রান্সপোর্ট সুবিধা 
  • নির্ধারিত হোটেলে তিনবেলা খাওয়ার ব্যাবস্থা
  • রাজধানীর সকল দর্শনীয় স্থান ভ্রমনের সুবিধা 
  • খরচ: জনপ্রতি ১৪,৯০০ টাকা। 

ড্রাগন হলিডে: তিন দিন দুই রাতের প্যাকেজ

ড্রাগন হলিডের এই প্যাকেজে রাজধানী কুয়ালালামপুর এ তিনদিন দুইরাত থাকা যাবে। এই প্যাকেজে থাকছে-

  • রাউন্ড ট্রিপ এয়ার টিকিক খরচ
  • এসি ট্রান্সপোর্টে হাফ ডে ভ্রমণের সুযোগ 
  • Hotel Soleil এ থাকার ব্যাবস্থা
  • হোটেলে ফ্রী বুফে ব্রেকফাস্ট 
  • রিটার্ন এয়ারপোর্ট টান্সফার
  • খরচ: ৩১,০০০ টাকা। 

৪ দিনের কুয়ালালামপুর-জেনটিং হাইল্যান্ড প্যাকেজ 

ইটস হলিডেজ এর এই প্যাকেজে আপনি চার দিন তিন রাত কুয়ালালামপুর ও জেনটিং হাইল্যান্ড ভিজিট করতে পারবেন। যা যা থাকছে-

  • রাউন্ড ট্রিপ এয়ার টিকিট (Us-Bangla Airlines/ Malindo Air/Air Asia)
  • সারদিনের ট্রাভেল ফ্রী
  • হোটেল তিন বেলা খাবার
  • খরচ: ৫৫,০০০ টাকা
  • কোনো হিডেন চার্জ নেই তবে বাজেট ফ্রেন্ডলি, মিডিয়াম ও হাই বাজেট তিন ধরনের হোটেল অফার করা হবে। সেক্ষত্রে খরচ বাড়তে পারে।

মালয়শিয়ায় কোথায় থাকবেন এবং খরচ কেমন

এজেন্সি ছাড়া বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়া ঘুরতে গিয়ে থাকার জন্যমালয়েশিয়ার কিছু জনপ্রিয় হোটেল, রিসোর্ট এবং আবাসন ব্যবস্থার চার্জ, বিশেষ সুবিধা এবং যোগাযোগের তথ্য দেওয়া হল:

শাংরি-লা (shangri-la)হোটেল, কুয়ালালামপুর:

চার্জ: প্রতি রাত 17,000 টাকা থেকে শুরু।

ভিউ: সিটি ভিউ বা পেট্রোনাস টুইন টাওয়ার ভিউ।

বিশেষ সুবিধা: আউটডোর পুল, স্পা, ফিটনেস সেন্টার, একাধিক খাবারের অপশন, বুফে সিস্টেম, ২৪ ঘন্টা ওয়াইফাই সুবিধা ইত্যাদি। 

যোগাযোগের তথ্য:

ফোর সিজন রিসোর্ট ল্যাংকাউই:

চার্জ: প্রতি রাত 60,000 টাকা থেকে শুরু।

ভিউ: সমুদ্র সৈকত বা বাগানের সরাসরি ভিউ।

বিশেষ সুবিধা: প্রাইভেট বিচ, ইনফিনিটি পুল, ওয়াটার স্পোর্টস, স্পা, রেস্তোরাঁ, তিন বেলা খাবার ও ২৪ ঘন্টা ওয়াইফাই সুবিধা ইত্যাদি।

লোকেশন: তানজুং রু বিচের কাছে ল্যাংকাউইতে অবস্থিত।

যোগাযোগের তথ্য:

দা-তাই  ল্যাংকাউই:

চার্জ: প্রতি রাত 45,000 টাকা থেকে শুরু।

ভিউ: রেইনফরেস্ট বা আন্দামান সাগরের মনোরম দৃশ্য।

বিশেষ সুবিধা: ব্যক্তিগত সি বীচ স্পেস, গল্ফ কোর্স, স্পা, একাধিক খাবারের অপশন, ওয়াইফাই সুবিধা, বাচ্চাদের জন্য খেলার স্থান। 

লোকেশন: মালয়েশিয়ার পশ্চিম উপকূলে অবস্থিত একটি দ্বীপপুঞ্জ ল্যাংকাউইতে অবস্থিত।

যোগাযোগ:

ম্যান্ডারিন ওরিয়েন্টাল, কুয়ালালামপুর:

চার্জ: প্রতি রাত 21,000 টাকা থেকে শুরু।

ভিউ: মূল শহরের স্কাইলাইন ভিউ।

বিশেষ সুবিধা: আউটডোর পুল, স্পা, ফিটনেস সেন্টার, একাধিক খাবারের অপশন, ওয়াইফাই, স্পোর্টস স্পেস। 

যোগাযোগ:

ম্যাজেস্টিক হোটেল কুয়ালালামপুর:

চার্জ: প্রতি রাত 15,000 টাকা থেকে শুরু।

ভিউ: শহরের দৃশ্য।

বিশেষ সুবিধা: সুইমিং পুল, স্পা, প্রাচীন-স্টাইলের স্থাপত্য, একাধিক খাবারের অপশন, পার্লার ইত্যাদি। 

লোকেশন: মালয়েশিয়ার রাজধানী শহর কুয়ালালামপুরে অবস্থিত।

যোগাযোগ:

তবে, উল্লেখিত চার্জ সিজন, ডিমান্ড ও রুমের ধরনের ওপর ভিত্তি করে পরিবর্তন হতে পারে। তাই একদম আপ-টু-ডেট তথ্যের জন্য সরাসরি হোটেলের সাথে যোগাযোগ করার পরামর্শ দিচ্ছি। 

এসবের বাইরে কিছুটা সস্তায় থাকা এক্সাবে এমন আরো কিছু হোটেল ও রিসোর্ট হল- 

ক্যামেরন হাইল্যান্ডস রিসোর্ট: তানাহ রাতা, ক্যামেরন হাইল্যান্ডে অবস্থিত, এটি চা বাগানের জন্য পরিচিত।

গয়া দ্বীপ রিসোর্ট: সাবাহের কোটা কিনাবালুর কাছে গয়া দ্বীপে অবস্থিত।

ইস্টার্ন ও ওরিয়েন্টাল হোটেল: জর্জ টাউন, পেনাং-এ অবস্থিত। এটি একটি ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট।

শাংরি-লা এর রাসা রিয়া রিসোর্ট এবং স্পা: বোর্নিও দ্বীপের সাবাহার কোটা কিনাবালুতে অবস্থিত

Pangkor Laut রিসোর্ট:  মালয়েশিয়ার পশ্চিম উপকূলে Pangkor Laut দ্বীপে অবস্থিত।

Chateau Spa & Organic Wellness Resort: Bukit Tinggi, Pahang রেইনফরেস্টের কাছে অবস্থিত। 

মালয়েশিয়ার ভিসা পাওয়ার উপায়

মালয়েশিয়া যাবার অনেক ধরনের ভিসা আছে যেমন টুরিস্ট ভিসা, ট্রানজিট ভিসা, বিজনেস কিংবা স্টুডেন্ট ভিসা। তবে প্রফেশনাল কাজের জন্য ভিসা নিয়ে এখানে আলোচনা করবো না।

ট্যুরিস্ট ভিসা: এই ভিসাটি যারা পর্যটনের উদ্দেশ্যে মালয়েশিয়া যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন তাদের জন্য প্রযোজ্য। যেমন দর্শনীয় স্থান, বন্ধু বা আত্মীয়দের সাথে দেখা করা বা অ-ব্যবসায়িক ইভেন্টে যোগদান করা।

ট্রানজিট ভিসা: আপনার যদি মালয়েশিয়ায় ছুটি থাকে এবং ট্রানজিটের সময় বিমানবন্দর ছেড়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন, তাহলে আপনার ট্রানজিট ভিসার প্রয়োজন হতে পারে।

মালয়েশিয়া ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া

  • অনলাইন আবেদন:

ভিসা আবেদনপত্র এবং পলিসি অ্যাক্সেস করতে বাংলাদেশে মালয়েশিয়ান দূতাবাস বা কনস্যুলেটের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। এরপর সেখানে ভিসা আবেদন ফর্মটি সঠিকভাবে পূরণ করুন এবং সমস্ত প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস ইনপুট দিন। এর মধ্যে সাধারণত একটি ভ্যালিড পাসপোর্ট, পাসপোর্ট-আকারের ছবি, ফ্লাইট যাত্রাপথ, হোটেল বুকিং, ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট এবং আপনার সফরের উদ্দেশ্য উল্লেখ করে একটি কভার লেটার লাগবে।

এটা নিশ্চিত করুন যে আপনার পাসপোর্টটি মালয়েশিয়ায় আপনার থাকার নির্ধারিত সময়ের পরেও কমপক্ষে ছয় মাসের জন্য বৈধ।

এরপর প্রয়োজনীয় ভিসা ফি প্রদান করুন। এটি আপনি যে ভিসার জন্য আবেদন করছেন তার ধরন এবং সময়কালের উপর নির্ভর করে বিভিন্ন রকম হতে পারে। তবে বর্তমানে টুরিস্ট ভিসা ৫,২০০ টাকা। যদিও এই ফি পরিবর্তন সাপেক্ষে, তাই দূতাবাস বা কনস্যুলেটের কাছ থেকে বর্তমান চার্জ চেক করার পরামর্শ দিচ্ছি।

  • আবেদন জমা দেওয়া:

একবার আপনি সমস্ত প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস সংগ্রহ করলে, বাংলাদেশে মালয়েশিয়ার দূতাবাস বা কনস্যুলেটে ব্যক্তিগতভাবে আপনার ভিসার আবেদন জমা দিন। তবে কোনো অসুবিধা এড়াতে আগেই অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেওয়ার পরামর্শ  দিচ্ছি।  

  • ভিসা প্রসেসিং সময়:

মালয়েশিয়ার ভিসার জন্য প্রোসেসিং এর সময় পরিবর্তিত হতে পারে। তবে এটি সাধারণত প্রায় ৫ থেকে ১০ কার্যদিবস লাগে। কোন অপ্রত্যাশিত কারণে ভিসা দ্রুত পেতে চাইলে, আপনার ভ্রমণের তারিখের আগে সরাসরি তাদের অফিসে গিয়ে আবেদন করতে পারেন।

  • ভিসা সংগ্রহ:

আপনার ভিসার আবেদন অনুমোদিত হলে, আপনাকে দূতাবাস বা কনস্যুলেট থেকে ফোনে বা ই-মেইল এ জানানো হবে। 

আপনি ব্যক্তিগতভাবে আপনার ভিসা সংগ্রহ করতে পারেন। বা একটি এপ্লিকেশন এবং ভিসা ফি প্রদানের রসিদ দিয়ে আপনার পক্ষ থেকে ভিসা সংগ্রহ করার জন্য অন্য কাউকে পাঠাতে পারেন।

বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার দূতাবাসের তথ্য 

মালয়েশিয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশের দূতাবাস:

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশী দূতাবাস সেদেশে বাংলাদেশের কূটনৈতিক পরিস্থিতির প্রতিনিধিত্ব করে। এটি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বৃদ্ধি, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি, বাংলাদেশী নাগরিকদের কনস্যুলার সেবা প্রদান এবং ভিসা প্রক্রিয়াকরণ, কনস্যুলার সহায়তা, জরুরী পরিস্থিতিতে সহায়তা এবং অন্যান্য বিভিন্ন বিষয়ে সহায়তা প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। 

যোগাযোগের ঠিকানা:

দূতাবাসের নাম: বাংলাদেশ হাই কমিশন, কুয়ালালামপুর

লোকেশন:  2 নং, জালান তামান দুতা, অফ জালান দুতা, 50480 কুয়ালালামপুর, মালয়েশিয়া

টেলিফোন: +603-2092 7500, +603-2092 7501

ফ্যাক্স: +603-2093 6473

ইমেইল: mission.kualalumpur@mofa.gov.bd

ওয়েবসাইট: http://www.bangladeshhighcommissionkl.com/

বাংলাদেশে মালয়েশিয়ার দূতাবাস 

বাংলাদেশে মালয়েশিয়ান দূতাবাস মালয়েশিয়ার নাগরিকদের কনস্যুলার সার্ভিস দিয়ে থাকে। যার মধ্যে পাসপোর্ট এবং ভিসা সার্ভিস, জরুরী পরিস্থিতিতে সহায়তা এবং অন্যান্য বিভিন্ন বিষয়ে সহায়তা ইনক্লুডেড রয়েছে। 

যোগাযোগের তথ্য:

দূতাবাসের নাম: মালয়েশিয়া দূতাবাস, ঢাকা

লোকেশন: বাড়ি নং 19, রোড নং 6, বারিধারা, ঢাকা 1212, বাংলাদেশ।

টেলিফোন: +880-2-988-1111

ফ্যাক্স: +880-2-882-5391

ইমেইল: mwdhaka@kln.gov.my

ওয়েবসাইট: https://www.kln.gov.my/web/bgd_dhaka/home

tour package goofly24.com

নিরাপদে মালয়শিয়া ভ্রমণ টিপস

  • ভ্রমণের পুরোটা সময় পাসপোর্ট ও ভিসা সাথে রাখবেন
  • সিজন ও ওয়েদারের কথা মাথায় রেখে পোশাক নিয়ে যাবেন
  • ট্রাভেল ইনসুরেন্সের ব্যবস্থা রাখবেন যেন কোনো এমারজেন্সিতে সাহায্য পেতে পারেন
  • স্থানীয়দের সংস্কৃতি ও ধর্মীয় অনুভূতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবেন। 

আর্টিকেলটিতে মালয়েশিয়ার দর্শনীয় স্থান, বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়া যাওয়ার উপায়, বিভিন্ন প্যাকেজ, খরচ, ভিসা পাওয়ার উপায় ও নিয়ম-কানুন সম্পর্কে সবকিছু জানানোর চেষ্টা করেছি। মালয়েশিয়া ভ্রমনের এর যত প্রয়োজনীয় বিষয় আছে সব আজ একসাথে তুলে ধরেছি। তাই আর দেরি কেন? বৈচিত্র্যময় সৌন্দর্যে ভরা মালয়েশিয়া এক্সপ্লোর করতে বেরিয়ে যান এই ইদেই। 

Scroll to Top